বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরেছেন ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তামিমা সুলতানা তাম্মি। তবে বিয়ের পর থেকে বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না তাঁদের।
সে বিতর্ক এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, বিয়ের ১০ দিনের মাথায় তাঁরা ঘটা করে সংবাদ সম্মেলনে এসে জানাতে বাধ্য হলেন— চার বছর আগেই নাসিরের নবপরিণীতা তালাক দিয়েছিলেন তাঁর সাবেক স্বামী রাকিব হাসানকে।
অথচ, এই সময়ে নবদম্পতির থাকার কথা ছিল হানিমুনে কিংবা একান্ত কোনো সময়ে। কিন্তু বিতর্কের জেরে তা আর হয়ে উঠেনি। বাধ্য হয়ে নথিপত্র নিয়ে হাজির হলেন গণমাধ্যমে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নবদম্পতির আইনজীবী। শুরুতেই তিনি বলেন, ‘তাঁদের (নাসির-তামিমা) এই বিপন্ন সময়ে, এই সংকটে গণমাধ্যমকর্মীরা যেন পাশে থাকেন।’
আইনজীবীর পরেই কথা বলেন তামিমা সুলতানা তাম্মি, ‘মিস্টার রাকিব বলেছেন, আমি তালাক না দিয়ে উনাকে (নাসির) বিয়ে করেছি। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। আমি শরিয়ত ও আইন মোতাবেক ২০১৬ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিচ্ছেদের (ডিভোর্স) আবেদন করি। এরপর ২০১৭ সালের ২২ এপ্রিল সেই তালাকটি কার্যকর হয়। এটা তাদের পরিবার এবং তিনি (রাকিব) এই সম্পর্কে জানতেন।’
তামিমা সুলতানা আরও বলেন, ‘রাকিব কেন এটা করেছেন, এটা আপনাদের হয়তো-বা বোঝা হয়ে গেছে। উনি যতগুলো কথা বলেছেন, শুধু দুটি জিনিস ছাড়া, উনার সঙ্গে আমার বিয়ে হয়েছিল এবং আমাদের একটি বাচ্চা আছে; এটা ছাড়া সম্পূর্ণ কথাই মিথ্যা।’ এই কথাগুলো বলতে বলতে গলা ধরে আসে তামিমার। পাশে বসে থাকা স্বামী নাসির হোসেন তা আঁচ করতে পেরেই স্ত্রীর কাঁধে ভরসার হাত রাখলেন। এরপরই লজ্জাভরা হাসি দেন নববধূ। নিচের দিকে তাকাতে তাকাতে মুচকি হাসেন নাসিরও।
পরে তামিমা বলেন, ‘উনি (রাকিব) যা যা বলেছেন, প্রত্যেকটি কথার যথাযথ প্রমাণ আমাদের কাছে রয়েছে। আরেকটি কথা আমি বিশেষভাবে উল্লেখ করতে চাই, বিভিন্ন ফেসবুক বা মিডিয়ায় আমাদের আইডি ফেইক করে মিথ্যা তথ্য দেওয়া হচ্ছে। আমার এখন কোনো ফেসবুক আইডি অ্যাকটিভ নেই। এমনকি নাসিরেরও নেই। নাসিরের একটি ফেসবুক পেজ আছে। আমাদের কোনো কিছু যদি জনগণকে জানাতে হয়, সেক্ষেত্রে আমরা আপনাদেরকে (সাংবাদিক) জানিয়ে গণমাধ্যমের মাধ্যমে ওর (নাসির) ফেসবুকের ভ্যালিড পেজ থেকে এসে জানাব। দয়া করে কারো কথা না শুনে এসব থেকে বিরত থাকুন।’
এরপর সংবাদ সম্মেলনে আসেন নাসির হোসেন। বিয়ে নিয়ে বিতর্কের জেরে ক্রিকেটার নাসির হোসেন বলেন, ‘আসলে আমার তেমন কিছু বলার নেই। আমি চার বছর আগে থেকে তামিমাকে চিনি। সে প্রথমে ভালো বন্ধু পরে লাভার (প্রেমিকা)। বিয়ে করেছি আইনগতভাবে ও ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক। এমন হলে আমরা ওপেন বিয়ে করতাম না, লুকিয়ে করতাম।’
নাসির আরও বলেন, ‘আমি সব জানি, তামিমার আগে বিয়ে হয়েছে, ওর বাচ্চা আছে। আমি কাগজ পেয়েই তাঁকে বিয়ে করেছি। আমরা যা করেছি, সব লিগ্যাল করেছি; কোনো ভুল করিনি।’
এর আগে গত শনিবার রাকিব হাসান বলেছিলেন, ‘হঠাৎ করে শুনলাম নাসির আমার ওয়াইফের হাজব্যান্ড হয়ে গেছে। আমার বউয়ের সঙ্গে ডিভোর্স ছাড়া সে তামিমাকে বিয়ে করেছে। সে (তামিমা) আমাকে এখনও কোনো কাগজ পাঠায়নি। হঠাৎ করে আমি শুনতেছি যে, সে বিয়ে করে ফেলেছে। আমার এক বন্ধু বলতেছে, দেখেন তো রাকিব ভাই, তামিমা আপু তো নাসিরকে বিয়ে করে ফেলেছে। আমি নিজেও অবাক হয়েছি। পরে আমি তামিমাকে ফোন দিয়েছি, এসএমএস করেছি, সে কিছুর জবাব দেয়নি। পরে আমি উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি জিডি করেছি।’