শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৩১

প্রকাশিতঃ সোমবার, ২০ নভেম্বর ২০১৭ ১২:১৮:১৩ অপরাহ্ন

খোলা বাজারের গোপন খবর...

ঢাকা: সাজেদুল (৩৫)। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। থাকেন রাজধানীর মতিঝিল আবাসিক এলাকার এজিবি সরকারি কলোনিতে। সোমবার বেলা আড়াইটায় মতিঝিল এজিবি কলোনির কাঁচাবাজার এলাকায় খোলা বাজারে (ওএমএস) ট্রাকে চাল ও আটা কিনতে যান। ৫ কেজি চাল ও ৫ কেজি আটা চাইলে বিক্রেতা তাকে বললেন, 'চাল আছে আটা নেই। আজ চাল নিয়ে যান, কাল এসে আটা নিয়ে যাইয়েন। আপনাকে চিনে রাখলাম, আটা আপনি কাল পাবেন।' একটু দাঁড়িয়ে সাজেদুল চাল না নিয়ে চলে গেলেন ফকিরাপুল পোস্টাল কলোনির সামনে দাঁড়ানো খোলা বাজারের ট্রাকের কাছে। কিন্তু ততক্ষণে বেচা-বিক্রি শেষ করে সব গুছিয়ে নিচ্ছিলেন বাবুল মিয়া। সাজেদুলের মতো আরও একজন ক্রেতা আসলেন। কিন্তু এখন আর বিক্রি হবে না- সাফ জানিয়ে দিলেন বাবুল (৫৫)। কারণ নতুন বস্তা খুললে তা বিক্রি হবে না। এ নিয়ে সাজেদুলের সঙ্গে কিছুটা কথা কাটাকাটির এক পর্যায় বাবুল বলেন, 'আপনি এক বস্তা চাল নেবেন? তাহলে দিয়ে দেই।' শেষ পর্যন্ত চাল-আটা না কিনেই বাধ্য হয়ে ফিরে গেলেন সাজেদুলসহ অন্য ক্রেতা। বিক্রি না কারার কারণ জানতে চাইলে শীর্ষনিউজকে বাবুল বলেন, 'বেলা ১১টায় চালের একটি বস্তা খুলেছি। এই মাত্র (২টা ৫০ মিনিট) বেচা শেষ হলো। এখন যদি নতুন বস্তা খুলি তা রাত ১০টায়ও বেচা শেষ হবে না। আর সে পর্যন্ত তো দাঁড়িয়ে থাকাও সম্ভব না।' এর পর বেলা ৩টায় শীর্ষনিউজের এই প্রতিবেদক যান এজিবি কাঁচা বাজারের খোলা বাজারের ট্রাকের কাছে। ততক্ষণে বিক্রি বন্ধ করে টাকা পয়সার হিসাব ও ভাগ বন্টন চলছিল। এতো দ্রুত বিক্রি বন্ধ করার কারণ জানতে চাইলে বিক্রেতা মনির বলেন, 'আটা শেষ হওয়ার পর আর কোনও কাস্টমার আসে না। একটু আগে জোর করে এক রিকশাচালককে খোলা বস্তার শেষ চাল দিয়েছি। এখন আর খুললে বিক্রি হবে না।' আটা আছে কিনা জানতে চাইলে মনির শীর্ষনিউজকে বলেন, সকাল ৯টায় ট্রাক দাঁড়ানোর সাথে সাথে দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। এক ঘণ্টা পার না হতেই আটা শেষ হয়ে যায়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, প্রতিদিন ২০ বস্তা আটা ও ২০ বস্তা চাল পাই। আটা মুহূর্তের মধ্যে বিক্রি হয়ে যায়। কিন্তু চাল চার ভাগের একভাগও বিক্রি হয় না। আগে আটা কিনতে চাইলে চাল নিতেও বাধ্য করার কথা স্বীকার করে আলাপচারিতায় মনির বলেন, এখন আর সেই সিস্টেম নেই। বলেন, ভাই ঢাকার মানষে কি এই আতপ চাল খায়? কয়জনে এই চাল কিনে? আপনি কি এই চাল নিবেন? আমাকে বললে আমিও তো এই চাল বাসায় নিবো না। এই চাল বেচে আমাদের লস হচ্ছে। কিন্তু কি করার? তিনি বলেন, আমরা খাদ্যমন্ত্রীর কাছে এ ব্যাপারে লিখিত জানিয়েছি যে, কমিশন না বাড়ালে ওএমএস কার্যক্রম চালানো ডিলারদের পক্ষে অসম্ভব। মন্ত্রী আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা অপেক্ষা করছি, দেখা যাক কী হয়।
43A Railway Pde Lakemba, NSW 2195
email: editor@amardesh24.com
Copyright © 2016. Allright Reserved amardesh24.com