শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৪:০০

প্রকাশিতঃ মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৮ ০৬:১০:২৮ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে: টেলিগ্রাফের সম্পাদকীয়

দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচ বছরের জেল দেয়া হয়েছে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে। তিন বারের এই প্রধানমন্ত্রী, তার ছেলে ও কয়েকজন সহযোগীর বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট থেকে এক কোটি রুপির বেশি আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। বলা হয়েছে, খালেদা জিয়া সর্বশেষ যখন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় ছিলেন, তখন এই অর্থ আত্মসাত করা হয়েছে। বাংলাদেশ একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিকে। এ বছরের শেষের দিকে সেই নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে এবং বাংলাদেশের বিস্তৃত রাজনৈতিক ক্ষেত্রের দিক থেকে খালেদা জিয়াকে শাস্তি দেয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখা যেতে পারে। কারাবরণ করায় আগামী নির্বাচনী লড়াই থেকে তিনি বাদ পড়ার বড় রকমের আশঙ্কা রয়েছে। আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তির দু’বছরের বেশি জেল হলে তিনি নির্বাচন করতে পারেন না। যদি উচ্চ আদালত নিম্ন আদালতের রায়কে বহাল রাখেন, তাহলে কান্ডারিহীন বিএনপির প্রতি তা হবে একটি বড় আঘাত। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা হয়তো সেটাই আশা করবেন। দুর্নীতির শিকর উপড়ে ফেলে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় প্রতিশ্র“তিবদ্ধ আওয়ামী লীগ। খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে তারা এটাকে তারই একটি উদাহরণ হিসেবে দেখাতে ব্যাকুল। নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে সততা ও জবাবদিহিতা। আওয়ামী লীগ যদি তাদের ন্যায়বিচারের লড়াইয়ের বিষয়টি ভোটারদের বোঝাতে সক্ষম হয়, তাহলে ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে যেসব চ্যালেঞ্জ আসবে তা থামিয়ে দিতে পারবে তারা। এরই মধ্যে তারা বিচারের মাধ্যমে বেশ কিছু যুদ্ধাপরাধীকে শাস্তি দিয়েছে। ওদিকে খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে ক্ষমতাসীনদের ব্যর্থতা থেকে জনগণের দৃষ্টি সরে যেতে পারে। ক্ষমতাসীনদের এমন ব্যর্থতার মধ্যে রয়েছে ভারতের সঙ্গে তিস্তা নদীর পানি বন্টন চুক্তিতে অচলাবস্থা। খালেদা জিয়াকে শাস্তি দেয়ার ফলে অবরুদ্ধ বিএনপির সামনে র‌্যালি সমাবেশ করার একটি সুযোগ এসেছে। নিজেদের নেতাকর্মী ও ভোটারদেরকে সচল করতে উপলক্ষ খুঁজছে বিএনপি। এর জন্য উত্তম উপলক্ষ হতে পারে খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার। অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিচক্ষণ ব্যবস্থা নেয়ার মধ্যে কোনো ভুল নেই। বাংলাদেশে প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে রয়েছে কলহপূর্ণ সম্পর্কের ইতিহাস। এর মধ্যে খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তারের কারণে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে। এমন রাজনৈতিক আবহ সৃষ্টি হতে পারে যে, ক্ষমতাকে আরো কুক্ষিগত করার জন্য বিরোধী রাজনীতিকদের সরিয়ে দিচ্ছে শেখ হাসিনা ওয়াজেদের সরকার। এমন ধারণা ছড়িয়ে পড়লে তা থেকে কর্তৃত্ববাদী শাসনের আতঙ্ক দেখা দিতে পারে, যেটা বাংলাদেশ অপছন্দ করে। শেখ হাসিনা ওয়াজেদ ও খালেদা জিয়ার মধ্যে যে তিক্ত সম্পর্ক রয়েছে তা এমনটা প্রদর্শন করছে যে, এখনও রাজনীতি ব্যক্তিকেন্দ্রিক। বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য এটা কোনো শুভ লক্ষণ নয়।
43A Railway Pde Lakemba, NSW 2195
email: editor@amardesh24.com
Copyright © 2016. Allright Reserved amardesh24.com