শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৪১

প্রকাশিতঃ মঙ্গলবার, ০৯ জানুয়ারী ২০১৮ ০৫:১৮:৫৮ পূর্বাহ্ন

শীতে তীব্রতা কিছুটা কমেছে: ১০ জনের মৃত্যু

রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশেই শীতে তীব্রতা কিছুটা কমেছে। আজ মঙ্গলবার সকালে সূর্যের মুখ দেখা গেলেও মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে পড়েছে। এর আগে সোমবার দেশের ইতিহাসে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড পাওয়া গেছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়। সেখানে ব্যারোমিটারে তাপমাত্রা ছিল ২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা ৭০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এটিই ৫০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। শৈত্যপ্রবাহের কারণে তীব্র শীতে কাঁপছে হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত দিনাজপুরসহ দেশের উত্তরের জনপদ। প্রচণ্ড শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। দেখা দিয়েছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগবালাই। এর আগে ১৯৬৮ সালে বাংলাদেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড ছিল মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলে ২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রংপুর বিভাগের অবশিষ্ট জেলাগুলোতেও গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করে।। গতকাল সৈয়দপুরে তাপমাত্রা নেমে যায় ২.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এসব অঞ্চলে প্রচণ্ড শীতে জনজীবন প্রায় বিপর্যস্ত। সোমবার শীতে পাবনায় ৬ জনসহ মোট ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। হঠাৎ প্রচণ্ড ঠাণ্ডা নেমে আসায় জনজীবন বিপরর্যস্ত হয়ে পড়ছে। ঠাণ্ডা মোকাবিলার প্রস্তুতি না থাকায় কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটছে। রাজশাহী বিভাগেও প্রচণ্ড ঠাণ্ডা হাওয়ায় নাকাল অবস্থা মানুষের। তবে রংপুর বিভাগের চেয়ে রাজশাহী বিভাগে ঠাণ্ডা তুলনামূলকভাবে একটু কম। আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ আবদুল মান্নান জানিয়েছেন, ১৯৪৮ সাল থেকে আবহাওয়া অফিসে তাপমাত্রার রেকর্ড রয়েছে। দেখা যাচ্ছে ১৯৬৮ সালে শ্রীমঙ্গলে তাপমাত্রা নামে ২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। কিন্তু গতকাল সোমবার তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা শ্রীমঙ্গলের রেকর্ড ভেঙেছে। রাজধানী ঢাকায় রংপুর অথবা রাজশাহী বিভাগের মতো এতটা ঠাণ্ডা পড়েনি। প্রায় দেড় কোটি মানুষ এখানে অল্প পরিসরে গাদাগাদি করে বাস করে বলে ঢাকার তাপমাত্রা খুব বেশি নামে না। ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে তাপমাত্রা নেমে গেলেই খুব অস্বস্তিতে পড়েন ঢাকাবাসী। এখানে পাকা ভবনে যত মানুষ বাস করেন তার চেয়ে বেশি মানুষ বাস করেন শহরের মাঝখানে সরকারি জমিতে, রেল লাইনের পাশে ও নিম্নাঞ্চলে। এসব মানুষ বেশ বেকায়দায় পড়েছেন হঠাৎ এ প্রচণ্ড শীতে। মান্নান জানান, হিমালয় অঞ্চলের হিমশীতল বায়ুপ্রবাহ বাংলাদেশের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের বিভিন্ন অঞ্চলে নেমে আসায় এবং শুষ্ক বাতাস, ঘন কুয়াশা, ঊর্ধ্বাকাশের জেট বায়ু ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি চলে আসার কারণেই তাপমাত্রা এত বেশি নিচে নেমেছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, জেট বায়ু খুবই ঠাণ্ডা থাকে। এটি স্বাভাবিক সময়ে ৪০ থেকে ৫০ হাজার ফুটের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। তীব্র শৈত্যপ্রবাহের সময় এটি ১০ থেকে ২০ হাজার ফুটে নেমে আসে। এ বছর জানুয়ারির শুরু থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে ঠাণ্ডা বায়ু প্রবাহিত হতে শুরু করেছে। গত ৩ জানুয়ারির বিকেল থেকেই দেশের অর্ধেক অঞ্চল মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের আওতায় চলে আসে। গত ৪ জানুয়ারি চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা নামে সাড়ে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এরই ধারবাহিকতায় গত দুই দিন থেকে কয়েকটি স্থানে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছেন, চলতি শৈত্যপ্রবাহের মাত্রা দুই থেকে তিন দিন পর ধীরে ধীরে উন্নতি হবে। তবে আগামী পাঁচ দিন পর তাপমাত্রা অনেকটাই বাড়তে শুরু করবে। কারণ আন্দামান সাগরে একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হয়ে গতকাল বিকেল পর্যন্ত তা অগ্রসর হয়ে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তংসংগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। লঘুচাপটি আরেকটু অগ্রসর হলে তা দেশের তাপমাত্রার ওপর প্রভাব ফেলবে। ধীরে ধীরে শৈত্যপ্রবাহকে আরো উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের দিকে ঠেলে দেবে। তখন তাপমাত্রা একটি সহনীয় পর্যায়ে চলে আসতে পারে।
43A Railway Pde Lakemba, NSW 2195
email: editor@amardesh24.com
Copyright © 2016. Allright Reserved amardesh24.com