শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৯ রমজান, ১৪৪৫ | ১১:১২ পূর্বাহ্ন (GMT)
ব্রেকিং নিউজ :
X
শিরোনাম :
  • নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা রাষ্ট্রপতিকে দিয়েছে আ.লীগ: কাদের
  • ইসি নয়, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে হার্ডলাইনে যাবে বিএনপি


বুধবার, ১৫ নভেম্বর ২০১৭ ০১:৩১:৫০ অপরাহ্ন Zoom In Zoom Out No icon

আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছে বিএনপি

ঢাকা: দীর্ঘ উনিশ মাসে বিএনপি বড় ধরনের কোন সমাবেশ করতে না পারলেও বেগম খালেদা জিয়া গত মাসে লন্ডন থেকে ফিরে আসার দিন ও সড়ক পথে কক্সবাজার সফর এবং রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের মাধ্যমে উজ্জীবিত ও আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছে। এখন আর দলটিতে কোনও হতাশা নেই, সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে উৎসাহের কোনও ঘাটতি নেই। বরং তারা এখন ক্ষমতায় যাওয়ার প্রহর গুণছে। অথচ কিছুদিন আগেও নেতা-কর্মীরা দলের এবং নিজেদের ভবিষ্যত নিয়ে চরমভাবে হতাশ ছিল। দীর্ঘ তিন মাস লন্ডনে চিকিৎসার পর গত ১৮ অক্টোবর দেশে আসেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। দলের প্রধান দেশে ফিরাকে কেন্দ্র করে এদিন সকাল থেকেই নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকে বিমানবন্দরে। বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত রাস্তার এক পাশ পুরোটাই ছিলো বিএনপি নেতাকর্মীদের দখলে। সবার হাতে ছিলো প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন, ব্যানার এবং স্লোগানে স্লোগানে মুখোরিত ছিলো পুরো রাস্তা। নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মত। অন্যদিকে সড়ক পথে কক্সবাজার সফরে দলীয় নেত্রীকে স্বাগত জানাতে রাজধানীর নয়াপল্টন থেকে শুরু করে প্রতিটি স্টপেজে, উপজেলায়, জেলাসহ, কক্সবাজার পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারে নেতাকর্মী-সমর্থকদের উপচেপড়া ঢল নামে। উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। বর্ণিল সাজসজ্জা, ফুল ছিটিয়ে বেগম জিয়ার গাড়িবহরকে বরণ করে মানুষ। ফেরার দিন রাতেও লোহাগাড়া ও সাতকানিয়ায় মানুষের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। মানুষের অভাবনীয় উপস্থিতির কথা এখন বিএনপি নেতাকর্মীদের মুখে মুখে। কিন্তু কক্সবাজার যাওয়া এবং আসার সময় ফেনীতে দু'টো পৃথক ঘটনা না ঘটলে বলা যায় সফরটি আরও উসবমুখর হতো। কক্সবাজার এবং চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সাথে পৃথকভাবে বৈঠক করেছেন চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। সংগঠনকে আরো শক্তিশালী করার তাগিদ দেন তিনি। নেতাদের মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী দিনে কঠিন পথ পাড়ি দিতে হবে। খালেদা জিয়া নেতাকর্মীদের বারবারই ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন কক্সবাজারের সফরে। সর্বশেষ আলোড়ন তুললো সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশ। নানামুখী প্রতিকূলতার পরেও ঢল নামে নেতা-কর্মীদের। এমন লোক সমাগম হওয়ায় উজ্জ্বীবিত দলটির কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত। এই সমাবেশের মাধ্যমে বেশকিছু অর্জন হয়েছে বলে মনে করেন বিএনপি নেতারা। এর মধ্যে অন্যতম হলো আত্মবিশ্বাস। জনসমর্থনের আত্মবিশ্বাসে বিএনপি এখন দারুণভাবে চাঙ্গা। বিএনপির নীতিনির্ধারক ফোরাম থেকে তৃণমূল পর্যন্ত বেশিরভাগ নেতার দৃষ্টিতে আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়াটাই সবচেয়ে বড় অর্জন। বিএনপি নেতারা বলছেন, রাজনৈতিক দলের সবচেয়ে বড় শক্তি হচ্ছে জনগণ। জনগণের বিপুল সমর্থন অর্জন যে কোনো রাজনৈতিক দলের জন্য অনুপ্রেরণার। বিশ্লেষকদের মতে, খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি এখন ব্যাপক জনসমর্থনে উজ্জীবিত-অনুপ্রাণিত। বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ঘিরে সাম্প্রতিক সময়ে তিনটি গণজমায়েত বিএনপি নেতাকর্মীদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে। চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার পর বিমানবন্দর সড়কে যে বিপুল অংশগ্রহণের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে এ দেশের মানুষ অভ্যর্থনা জানিয়েছে তা খুব সাধারণ ঘটনা নয়। এটা ছিল সরকারের প্রতি সাধারণ মানুষের বার্তা। রোহিঙ্গাদের দেখতে কক্সবাজার যাওয়ার পথে ঢাকা থেকে উখিয়া পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে মানুষ বিএনপি চেয়ারপারসনকে যেভাবে স্বাগত জানিয়েছে তা ছিল অনেকটাই অভূতপূর্ব। সারা দেশের বিএনপি নেতাকর্মীদের সেই চাঙ্গা হওয়া আত্মবিশ্বাসে নতুন মাত্রা যোগ করেছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশ। ড. মোশাররফ বলেন, সরকার মামলা-মোকদ্দমা দিয়ে, নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়েও মানুষের মনোভাবের পরিবর্তন ঘটাতে পারেনি। সমাবেশের আগে পুলিশ যেভাবে ঘরে ঘরে অভিযান চালিয়েছে, সারা দেশ থেকে ঢাকামুখী বাস বন্ধ রেখেছে, পথে পথে যানবাহনে তল্লাশি চালিয়েছে তার তোয়াক্কা না করেও নেতাকর্মীরা সমাবেশে যোগ দিয়ে প্রমাণ করেছে চরম প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও তারা উৎসাহ হারায়নি। বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, এই সমাবেশের মাধ্যমে দেশের মানুষ তাদের ভোটাধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পাবার জন্য যে উদগ্রীব তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে পেরেছে। বেগম খালেদা জিয়া যেই মুক্তির সংগ্রামে নেমেছেন তার সমর্থনে উপস্থিত হয়ে জনগণ পাশে থাকার জানান দিয়েছে। তিনি বলেন, সকল বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে ১৫ থেকে ২০কিলোমিটার পায়ে হেটে জনগণ সমাবেশে উপস্থিত হয়েছে। বাধা-বিপত্তি দিয়ে ক্ষমতায় বেশি দিন টিকে থাকা যায়না তার একটি প্রমাণ হয়েছে এই সমাবেশে। চট্টগ্রামের যাত্রাতে এবং বিমানবন্দরে আসার দিনও প্রমাণ হয়েছে, বাধা দিয়ে লাইট বন্ধ করেও জনগণকে দমানো যায় না। সামনে দলের কর্মসুচি অব্যাহত থাকবে বলেও জানান বিএনপির এই নেতা।





আরো খবর