শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১১ শাওয়াল, ১৪৪৫ | ১২:০৬ অপরাহ্ন (GMT)
ব্রেকিং নিউজ :
X
শিরোনাম :
  • নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা রাষ্ট্রপতিকে দিয়েছে আ.লীগ: কাদের
  • ইসি নয়, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে হার্ডলাইনে যাবে বিএনপি


রোববার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:৩৭:১১ অপরাহ্ন Zoom In Zoom Out No icon

এমপি রনজিতের বিরুদ্ধে হত্যা ও শ’ শ’ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ আ.লীগ নেতাদের

সংসদ সদস্য (এমপি) রনজিত কুমার রায়ের বিরুদ্ধে হত্যা, দুর্নীতি-ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে শ’ শ’ কোটি টাকা কামানো ও দলীয় নেতাকর্মীদের উপর হামলা-মামলাসহ নানা অপকর্মে জড়িত থাকার অভিযোগ করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা। রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে যশোর-৪ (যশোর-বাঘারপাড়া) আসনের এই এমপির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দহাখোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মোতালেব তরফদার। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘এমপি রনজিত কুমারের মতের বিরুদ্ধে গেলে হামলা-মামলা দিয়ে নির্যাতিত করা হয়। এমন অনেক প্রমাণ মিলবে আমাদের নির্বাচনী এলাকায়। অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, মুক্তিযোদ্ধা মোল্যা ওলিয়ারের হত্যার পেছনেও তার মদদ আছে।’ ‘২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে জয়লাভের পর থেকে তিনি টাকার নেশায় মগ্ন। দলীয় কমিটি এবং বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানে অন্তত দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। বিনিময়ে অযোগ্য ও অদক্ষ লোক বসিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছেন।’ সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যান মোতালেব তরফদার বলেন, ‘উপজেলা সদরের সবচেয়ে প্রাচীন প্রতিষ্ঠান বাঘারপাড়া ডিগ্রি কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ হিসেবে ২২ লাখ টাকার বিনিময়ে আব্দুল মতিনকে নিয়োগ দিয়েছেন। হাবুল্ল্যা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে ১২ লাখ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দিয়েছেন আজিজুর রহমানকে। রায়পুর কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে ১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দিয়েছেন কামরুজ্জামানকে। ধলগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে ১২ লাখ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দিয়েছেন মাহফুজুর রহমানকে। আগড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে ১২ লাখ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দিয়েছেন হুমায়ন কবিরকে। ছাতিয়ানতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে ১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দিয়েছেন শহীদুলকে।’ তিনি আরও বলেন, ‘অভয়নগর উপজেলার মাওলানা আ. আজিজের কন্যা মহাছিনা খাতুনকে ২২ লাখ টাকার বিনিময়ে বাঘারপাড়া উপজেলা খাজুরা ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসায় নিয়োগ দিয়েছেন। এছাড়া আ. হকের কন্যা নাঈমা আক্তারকে চেঙ্গুটিয়া বিসিসি মুজাদিয়া মাদরাসার শিক্ষক হিসেবে ১৭ লাখ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দিয়েছেন।’ ‘এছাড়াও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী নিয়োগে ২ উপজেলা থেকে কয়েক কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন এমপি রনজিত কুমার রায়। আওয়ামী লীগের কর্মী হয়েও ৭-৮ লাখ টাকা দিয়ে চাকরি নিতে হয়েছে অনেককে। এমন শ’ শ’ নাম আপনাদের বলতে পারবো। এসব নিয়োগের পেছনে আছে মোটা অঙ্কের অর্থের লেনদেন।’ সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, ‘রনজিত কুমার রায় ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান। তখন নির্বাচনী হলফনামায় স্থাবর ও আস্থাবর সম্পদের বিবরণ দেন। সেখানে পৈত্রিক ৪ বিঘা কৃষিজমি, ৪ শতক জমির ওপর তেলিধান পূজা মৌজায় একটি টিনের ঘর আছে বলে উল্লেখ করেন। ছেলে কিংবা স্ত্রীর নামে কোনো ব্যাংক ব্যালেন্স বা জমি নেই। এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর ১০ বছরে কীভাবে তিনি আকাশছোঁয়া সম্পদের মালিক হলেন?’ ‘বর্তমানে তার নামে যশোর রেল রোডে ৫ ও ৩তলার দুটি, যশোর লোহাপট্টিতে ১টি, যশোর নিউমার্কেটে ২টি, বাঘারপাড়া উপজেলায় দোতলা ১টি, খাজুরা বাজারে ৪তলা ১টি, ঢাকার মিরপুর দারুস সালাম রোডে ২টি বাড়ি, ছেলেদের নামে ভারতে সল্ট লেক ও বারাসাতে ২টি বাড়ি, বাঘারপাড়া ও চৌগাছা উপজেলায় ২২৫ একর জমি এবং খুলনা জেলার ডুমুরিয়ায় ৫০ একর জমিসহ মৎস্য ঘের আছে। নিজে পাজেরো গাড়িতে চড়েন, যার মূল্য ১ কোটি টাকা। ২ ছেলে ও স্ত্রীর ব্যবহৃত ৩টি গাড়ির মূল্য ৯০ লাখ টাকা। এছাড়া স্ত্রীর নামে ১০টি ট্রাক-কাভার্ডভ্যান আছে, যার মূল্য ৫ কোটি টাকা।’ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাঘারপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আতিয়ার রহমান সরদার, সাধারণ সম্পাদক জুলফিকার আলী, যশোর জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য আজগর আলী, ১নং ইউনিয়নের চেয়রম্যান দিল পাটুয়ারী, বাসুয়ারি ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ সরদার, জামদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম টুটুল, বন্দোবিলা ইউপি চেয়ারম্যান সবদুল হোসেন খান, বাঘার পাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আ. রউফ মোল্যা, বাঘারপাড়া যুবলীগের সাবেক নেতা মো. নজরুল ইসলাম, সাবেক চেয়ারম্যান জাকির হোসেন, সাইফুজ্জামান ভোলা, মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল আজিজ, বাবলু কুমার সাহা, ইমদাদ হোসেন, বাঘারপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি বায়োজিদ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক বি এম শাহাজালালা, দরাজ হাটের জালালা উদ্দীন প্রমুখ।





আরো খবর