শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল, ১৪৪৫ | ০৫:৩০ অপরাহ্ন (GMT)
ব্রেকিং নিউজ :
X
শিরোনাম :
  • নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা রাষ্ট্রপতিকে দিয়েছে আ.লীগ: কাদের
  • ইসি নয়, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে হার্ডলাইনে যাবে বিএনপি


শুক্রবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১২:৪৮:৫৪ অপরাহ্ন Zoom In Zoom Out No icon

৫১ বছরে ৬৬ হাজার হেক্টর ভূমি বিলীন পদ্মায়

পদ্মা ভাঙছে কূল, ভাঙছে মানুষের বুক। শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার অনেক বসতি ও বাজার এখন পদ্মায় বিলীন। সর্বস্বান্ত মানুষের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে আশপাশ। পদ্মার এই আগ্রাসী থাবা কখন কাকে পথে বসিয়ে দেয় তার কোনো আভাস না মিললেও হিসাব বলছে, বিগত প্রায় ৫১ বছরে অন্তত ৬৬ হাজার হেক্টর জমি গিলে খেয়েছে উত্তাল এই নদী। 

 

৬৬ হাজার হেক্টর জমি হিসাবে ৬৬৩ বর্গ কিলোমিটারের বেশি। ধরতে গেলে যা প্রায় মেহেরপুর জেলার সমান (মেহেরপুরের আয়তন প্রায় ৭১৬ বর্গ কি.মি.)। আন্তর্জাতিক কোনো শহর ধরতে গেলে শিকাগোর আয়তনের চেয়ে বেশি (যুক্তরাষ্ট্রের শহরটির আয়তন ৬০৬ বর্গ কি.মি.)

পদ্মার স্যাটেলাইট ছবি ১৯৯৮ সাল

পদ্মার আয়তন, আকৃতি বদল আর স্থান পরিবর্তন নিয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদনেই এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। সংস্থাটির অনলাইন প্রচারমাধ্যম ‘আর্থ অবজারভেটরি’তে প্রকাশিত প্রতিবেদনে পদ্মা ও তার তীরবর্তী অঞ্চল নিয়ে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। 

১৯৮৮ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত স্যাটেলাইটে ধারণকৃত ১৪টি ছবি বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, অন্তত গত ৩০ বছর ধরে আয়তন বাড়ছে পদ্মার। নদীটির আকৃতির রূপান্তর হচ্ছে আবার স্থানও বদলাচ্ছে। ফলে হচ্ছে ভূমিক্ষয়।

পদ্মার স্যাটেলাইট ছবি ২০০০ সাল

প্রতিবেদনে জানানো হয়, ১৪টি ছবিই নেওয়া হয়েছে প্রত্যেক বছরের শুষ্ক মৌসুম জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে। স্যাটেলাটের ল্যান্ডস্যাট ৫ ছিল থিমেটিক ম্যাপারের জন্য। ল্যান্ডস্যাট ৭ ছিল বৃদ্ধি পাওয়া থিমেটিক ম্যাপারের জন্য। ল্যান্ডস্যাট ৮ ছিল প্রয়োগগত ভূমির ছবির জন্য।

নাসার প্রতিবেদনে বলা হয়, লাখো মানুষ যাতায়াত, সেচ ও চাষাবাদের জন্য পদ্মার ওপর নির্ভরশীল। এ বিপুলসংখ্যক মানুষকে স্বভাবতই নদীটির ১৩০ কিলোমিটার উপকূলের পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলতে হয়। 

পদ্মার স্যাটেলাইট ছবি ২০১৮ সাল

কিন্তু নদীর তীর ভাঙনের কারণে বছরে বছরে অসংখ্য বসত-বাড়ি ও দোকান-পাট-স্থাপনা হারিয়ে গেছে। আবাসস্থল থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন মানুষ। প্রত্যেক বছর হাজারও ভূমিক্ষয় হয়ে পদ্মায় বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ১৯৬৭ সাল থেকে ৬৬ হাজার হেক্টরের বেশি ভূমি পদ্মা তলিয়ে নিয়েছে। আয়তন বিচারে যা যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বড় শহর শিকাগোর সমান। 

নাসার প্রতিবেদনে বলা হয়, ভয়াবহ মাত্রার এ ভূমিক্ষয়ের অন্যতম দু’টি কারণ হলো- প্রথমত, এমন উত্তাল নদী প্রবাহের মধ্যে উপকূল সুরক্ষা কর্মসূচিতে খুব কম এলাকা থাকা; দ্বিতীয়ত, নদীর তীরে বিশাল বালুচরে থাকা।

দীর্ঘদিন থেকেই পদ্মা নদীর প্রশস্ততা, গভীরতা, আকৃতি এবং এর সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। নাসার স্যাটেলাইটে ধারণকৃত ছবিতে দেখা যায়, ১৯৮৮ সাল থেকে পদ্মার আকৃতি ও প্রশস্ততার পরিবর্তন হচ্ছে। এছাড়া নদীটির আঁকা-বাঁকা গতিপথ এর ভিন্নরকম ভূ-তাত্ত্বিক দৃষ্টিভঙ্গি ও বিশ্লেষণ হাজির করছে বিজ্ঞানীদের সামনে। 






আরো খবর