জাতীয় / মিয়ানমার থেকে শূন্য হাতে ফিরেছে বাংলাদেশি প্রতিনিধিদল: তুর্কি সংবাদ সংস্থা
বৃহস্পতিবার, ১৬ আগস্ট ২০১৮ ০৮:১৯:২৮ পূর্বাহ্ন
মিয়ানমার থেকে শূন্য হাতে ফিরেছে বাংলাদেশি প্রতিনিধিদল: তুর্কি সংবাদ সংস্থা
বাংলাদেশি প্রতিনিধিদল মিয়ানমার থেকে শূন্য হাতে ফিরেছে বলে খবর দিয়েছে তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদুলু। ১৪ই আগস্টে ঢাকা ডেটলাইনের ওই খবরের শিরোনাম হলো- ‘বাংলাদেশে ডেলিগেশন রিটার্নস এম্পটি হ্যান্ডেড ফ্রম মিয়ানমার। আনাদুলু তুরস্ক সরকার নিয়ন্ত্রিত একটি সরকারি সংবাদ সংস্থা। তুরস্ক বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের ব্যাপকভিত্তিতে মানবিক সহায়তাদানকারী আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর অন্যতম। দেশটির দাতব্য সংস্থাগুলো রোহিঙ্গাদের মধ্যে কোরবানির গোশত সরবরাহেরও উদ্যোগ নিয়েছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলীর নেতৃত্বাধীন ১৫ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল গত বৃহস্পতি ও শনিবারের মধ্যে মিয়ানমার সফর করে।
উল্লেখ্য, ওই সফর সম্পর্কে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেয়া বিবৃতিতেও অবশ্য প্রত্যাবাসন শুরুর কোনো সম্ভাব্য তারিখ উল্লেখ করা হয়নি।
উপরন্তু রাখাইনে কিছু বাড়িঘর নির্মাণের অগ্রগতি বিষয়ে কিছু নির্দিষ্ট তথ্য দেয়া হয়েছে। অথচ রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেয়ার ব্যাপারে কোনো ধরনের অগ্রগতির কোনো খবর দেয়া হয়নি। ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন কার্ড নিতে মিয়ানমার বর্তমানে রাখাইনে বসবাসরত অবশিষ্ট রোহিঙ্গাদের বাধ্য করেছে। এখন তারা প্রত্যাগত রোহিঙ্গাদেরকেও এনভিসি নিতে বাধ্য করবে। এনভিসি গ্রহণ করার অর্থ হলো নিজেদেরকে মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে দাবি করার অধিকার প্রকারান্তরে পরিত্যাগ করা। কারণ এনভিসিধারীরা ভবিষ্যতের কোনো একটি অনির্দিষ্ট সময়ে নাগরিকত্বের জন্য দরখাস্ত করার সযোগ পাবে। বাংলাদেশের বিবৃতি অবশ্য বলেছে, রোহিঙ্গারা এনভিসি নিতে অনীহা প্রকাশ করেছে। বিষয়টি যেন তারা বিবেচনায় নেন। কিন্তু মিয়ানমারের পক্ষ এবিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট প্রতিশ্র“তি দেয়নি।
তুর্কি বার্তা সংস্থা বলেছে, গত মঙ্গলবার ঢাকায় উদ্বাস্তু এবং প্রত্যাবাসন বিষয়ক কমিশনার আবুল কালাম আনাদুলুকে বলেছেন, উদ্বাস্তু সংকট নিরসনের চলমান উপায় খুঁজে বের করার অংশ হিসেবে তারা মিয়ানমার সফর করেছেন। আমরা আশা করি যে, এরকম প্রক্রিয়ায় কখনো উদ্বাস্তুদের তাদের নিজেদের ভূমিতে ফিরে যাওয়ার পরিবেশ তৈরি হবে।
আনাদুলু বলেছে, এরকম উক্তি সত্ত্বেও আসলে কোনো নির্দিষ্ট অগ্রগতির কথা বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল প্রকাশ করতে পারেনি। শুধু তারা বলেছে, সফরটিই বাংলাদেশের জন্য একটি ইতিবাচক ফলাফল। কমিশনার বলেছেন, একটি যৌথ গ্রুপ আলোচনা অব্যাহত রেখেছে।
একটি স্থানীয় রাইটস সংস্থা কোস্ট-এর প্রধান সনৎ কে. ভৌমিক বলেছেন, রোহিঙ্গারা একটি মানবেতর জীবনযাপন করছে। অবিলম্বে রোহিঙ্গা সংকটের সুরাহা হওয়া দরকার। মি. ভৌমিক বলেন, বাংলাদেশ কূটনৈতিক উপায়ে একটি সমাধান চাইছে। সেজন্য তারা প্রতিবেশী চীন ও ভারতের সঙ্গেও কথা বলছে। এই দুটি দেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
সংবাদ সংস্থার রিপোর্টে বলা হয়, উদ্বাস্তুরা এই আশংকা করছেন যে, একবার যদি প্রত্যাবাসন শুরু করা হয়, তাহলে নাগরিক হিসেবে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয়টি ঝুলে যায় কিনা। মি. ভৌমিক তাদের এই আশংকা সমর্থন করে বলেন, মিয়ানমার এখন পর্যন্ত তাদের দেয়া কোনো প্রতিশ্র“তি বাস্তবায়ন করেনি।
গত সোমবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে কোনো দিনক্ষণ ঘোষণা করেননি। মি. হকের কথায়, ‘তারিখ এখনো স্থির হয়নি। কোনো দেশে উদ্বাস্তু পাঠানো খুবই জটিল ও দুরূহ, যা রাতারাতি শেষ করা যাবে না।