শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১১ শাওয়াল, ১৪৪৫ | ০৫:৪০ পূর্বাহ্ন (GMT)
ব্রেকিং নিউজ :
X
শিরোনাম :
  • নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা রাষ্ট্রপতিকে দিয়েছে আ.লীগ: কাদের
  • ইসি নয়, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে হার্ডলাইনে যাবে বিএনপি


বৃহস্পতিবার, ১৬ আগস্ট ২০১৮ ০৪:৫১:২৩ পূর্বাহ্ন Zoom In Zoom Out No icon

সিলেটে ‘অবৈধ’ হাট বসানোর তোড়জোড়

দুয়ারে কড়া নাড়ছে ঈদুল আজহা। ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হবেন মুসলিম উম্মাহ। কোরবানির পশু কিনতে ভীড় জমবে হাটে-বাজারে। আর ঈদুল আজহাকে টার্গেট করেই সিলেটের আনাচে কানাচে পশুর হাট বসাতে তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছেন মৌসুমী পশু ব্যবসায়ীরা। এসব হাট বসাতে প্রয়োজন হয় না অনুমতির। সিটি করপোরেশন ও পুলিশ প্রশাসনের যোগসাজশে নগরে অন্তত অর্ধশত হাট বসানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। যদিও নগর কর্তৃপক্ষ বলছে, এবার নগরীতে কোনো হাট ইজারা দেওয়া হচ্ছে না। কেননা, ইজারা দিলেও হাট ইজারাদারকে বুঝিয়ে দিতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয় তাদের। ২০১৬ সালে নগরীর কয়েদির মাঠ ইজারা দিলেও দখলদারদের কবল থেকে হাটটি উদ্ধার করে ইজারাদারকে সহজে দিতে পারেনি নগর কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে লিজ গ্রহীতা সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) বিরুদ্ধে মামলাও ঠুকে দেন আদালতে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মহানগর এলাকায় সিটি করপোরেশনের আওতাধীন একমাত্র পশুর হাটটি (কাজিরবাজার) মামলা জটিলতায় ব্যক্তির ভোগ দখলে। ইজারা না হওয়ায় হাটটি থেকে রাজস্ব বঞ্চিত সরকার। অথচ আইনি জটিলতা থাকার পরও কাজিরবাজার নিয়ে প্রশাসন অন্ধকারে রয়েছে। রহস্যজনক কারণে মামলা মোকদ্দমা থাকার পরও নগর কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ প্রশাসন কাজিরবাজারকে নগরীর একমাত্র বৈধ পশুর হাট হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছে। এ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। পশুর হাটে গরু। ছবি: বকরএই হাট ছাড়াও নগরীতে অসংখ্য পশুর হাট বসানোর তোড়জোড় চলছে। এসব হাট বসানোর নেপথ্যে রয়েছেন ক্ষমতাসীন দল ও এর অঙ্গসহযোগী সংগঠন এবং বিএনপি ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। রাজনৈতিক ময়দানে এই দুই দলের নেতাকর্মীর মধ্যে দূরত্ব যোজন যোজন হলেও অল্প সময়ে বেশি মুনাফার আশায় এক হয়ে পশুর হাট বসান তারা। এরইমধ্যে বেশ কিছু জায়গায় ও রাস্তার পাশে খুঁটিও বসানো হয়েছে। স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় রাস্তার ওপর পশুর হাট না বসাতে বলা হয়েছে। এ কারণে নগরীতে কোনো অবৈধ পশুর হাট ইজারা দেওয়া হচ্ছে না বলে জানান সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান। রাস্তার পাশে হাট বসালে পদক্ষেপ নিতে পুলিশ কমিশনারকে চিঠি দিয়েছেন বলেও জানায় মন্ত্রণালয়। এদিকে, মেট্টোপলিটন এলাকায় নগরবাসীকে বৈধ পশুর হাট থেকে গরু কেনার অনুরোধ জানিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে মহানগর পুলিশ। হাটগুলোর মধ্যে কাজিরবাজার, শিবের বাজার, কুড়িরগাঁও (ইসলামগঞ্জ বাজার), এয়ারপোর্ট থানার সাহেব বাজার সুন্নিয়া হাফিজিয়া দাখিল মাদ্রাসার মাঠ, দক্ষিণ সুরমা থানার লালাবাজার পশুর হাট, কামালবাজার, মোগলাবাজার থানার জালালপুর, হাজীগঞ্জ বাজার, এবং শাহপরাণ (র.) থানা এলাকায় রয়েছে ৩টি পশুর হাট। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একইভাবে সিটি করপোরেশন এলাকায় দক্ষিণ সুরমার কদমতলী, ও ঝালোপাড়ায় গত বছরের মতো এবারো ক্ষমতাসীন দলের এক কাউন্সিলরসহ প্রভাবশালীরা রাস্তার পাশে পশুর হাট বসানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন। এছাড়া নগরীর রিকাবিবাজার, পাঠানটুলা, মদীনা মার্কেট, আখালিয়া, বাগবাড়ি, কানিশাইল, কুমারগাঁও, চৌখিদেখি, লাক্কাতুড়া, উপশহর, টিলাগড়, এমসি কলেজ মাঠ, শাহী ঈদগাহ, নয়াবাজার, মেজরটিলা, ইসলামপুর, গাজি বুরহান উদ্দিন সড়কসহ বিভিন্ন এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে পশুর হাট বসানোর প্রস্তুতি চলছে। ট্রাকে করে গরু নিয়ে আসা হচ্ছে।ছবি: বকরআর সদর উপজেলা পরিষদ চারটি পশুর হাট ইজারা দিচ্ছে এবার। হাটগুলো হলো- খাদিমপাড়া, মীরাপাড়া, পীরেরবাজার, বড়শালা তেমুখী। তবে এসব হাটের বাইরেও শাহী ঈদগাহ শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম ও লাক্কাতুড়া এবং সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম ফটক সংলগ্ন সড়কে অবৈধ হাট বসানোর জন্য প্রস্তুতি চলছে। অবৈধ পশুর হাট নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে গরু ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নান ও ছালিক আহমদ বাংলানিউজকে বলেন, অবৈধ হাটে গরু রাখতে লাঠি হাতে ট্রাক আটকানো হয়। এসব হাটে গেলে ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা থাকে না। অনেক ক্ষেত্রে গরু বিক্রি করলেও টাকা নিয়ে ফেরার নিরাপত্তা থাকে না। আর ট্রাক না আটকালে মারধর করে গরু ছিনিয়ে নেওয়া হয়। সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মুহম্মদ আব্দুল ওয়াহাব বাংলানিউজকে বলেন, নগরে অবৈধ পশুর হাট না বসানোর ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা রয়েছে। এই নির্দেশনা বাস্তবায়নে কাজ করবে পুলিশ।





আরো খবর