বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান, ১৪৪৫ | ০২:১৯ অপরাহ্ন (GMT)
ব্রেকিং নিউজ :
X
শিরোনাম :
  • নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা রাষ্ট্রপতিকে দিয়েছে আ.লীগ: কাদের
  • ইসি নয়, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে হার্ডলাইনে যাবে বিএনপি


রোববার, ২১ জানুয়ারী ২০১৮ ০৫:৪৬:০০ পূর্বাহ্ন Zoom In Zoom Out No icon

বিচারবহির্ভূত হত্যা মোকাবিলায় ব্যর্থ বাংলাদেশ

ওয়াশিংটন: মানুষকে গোপনে আটকে রাখা, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার মতো গুরুতর অভিযোগগুলো মোকাবিলায় বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত সংস্থার ‘ওয়ার্ল্ড রিপোর্ট ২০১৮’তে এ কথা বলা হয়েছে। দোষীদের বিচারের মুখোমুখি না করে উল্টো অভিযোগগুলো অস্বীকার করা হয়েছে বলেও দাবি করেছে এইচআরডব্লিউ। তবে প্রতিবেদনে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা করা হয়েছে। এইচআরডব্লিউ ৯০টিরও বেশি দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে ৬৪৩ পৃষ্ঠার ২৮তম সংস্করণের এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে। প্রতিবেদনের বাংলাদেশ অংশে বলা হয়েছে, গত আগস্ট থেকে জাতিগত নিধনের মুখে ছয় লাখ ৫৫ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হাতে ধর্ষণ, অগ্নিকাণ্ড ও হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের শিকার হয় তারা। যদিও অধিকাংশ রোহিঙ্গাদের আনুষ্ঠানিকভাবে শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি বাংলাদেশ, তবে দেশটিতে প্রবেশ করতে দিয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশীয় অঞ্চলের পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জোর করে ফিরিয়ে না দেওয়ার জন্য এবং সীমিত সম্পদ দিয়েও এখন পর্যন্ত যেভাবে তাদের নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে তাতে অবশ্যই বাংলাদেশ কৃতিত্বের দাবিদার। স্থানীয় মানবাধিকারের কয়েকটি বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সংস্থাটি জানিয়েছে, দেশটির অনেকগুলো গুমের ঘটনা ঘটেছে। বিরোধীদলীয় সমর্থক ও সন্দেহভাজন জঙ্গি-উভয়কেই টার্গেট করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অ্যাডামস বলেন, বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশের মানবাধিকার রেকর্ডে ভালো কিছু খুঁজে পাওয়া কঠিন। যেহেতু দেশটিতে ২০১৯ সালে সাধারণ নির্বাচন হতে চলেছে তাই এই সময় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ভিন্নমতকে দমনের প্রচেষ্টাও বন্ধ করতে হবে। এর আগে ২০১৭ সালে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে ভাড়াটে সংগঠন বলে অভিহিত করেছিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। রাজধানীর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের পক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেছিলেন প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। গত ১২ জানুয়ারি (২০১৭ সাল) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সংগঠনটি বাংলাদেশে গুম, হত্যা ও বাকস্বাধীনতার হস্তক্ষেপে সরকারকে দায়ী করে। এর জবাবে আজ হাছান মাহমুদ বলেন, ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বাংলাদেশের একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল বিএনপি-জামায়াত এবং যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে ভাড়ায় খাটে। শুধু তাদের পক্ষে নয়, সিলেটে তারাপুর চা বাগান সই জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করায় গ্রেপ্তার ব্যবসায়ী রাগীব আলীর পক্ষে বিবৃতি দিয়ে তাঁরা প্রমাণ করেছে যে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ একটি ভাড়াটে সংগঠন। তারা পয়সার বিনিময়ে বিবৃতি দেয়, ভাড়ায় খাটে। তাদের বিবৃতি কিনতে পাওয়া যায়। আওয়ামী লীগের এই নেতা আরো অভিযোগ করে বলেছিলেন, ১২ জানুয়ারি (২০১৭ সাল) হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ওই বিবৃতির পর বিএনপির মহাসচিব এবং সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবসহ নেতারা প্রতিদিন বানোয়াট-মিথ্যা বিবৃতি দিচ্ছেন। এতে দেউলিয়াত্ব প্রমাণ হচ্ছে। বিএনপি নেতাদের নিয়মিত বক্তব্যই প্রমাণ করছে যে তাঁরা এই বিবৃতি কিনেছেন। বিএনপি-জামায়াতের আগুন সন্ত্রাসের কারণে শত শত মানুষ মারা গেলেও হিউম্যান রাইটস ওয়াচ তা নিয়ে কোনো বিবৃতি দেয়নি বলেও অভিযোগ করেন হাছান মাহমুদ। সংগঠনটি এর আগেও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করতে বিবৃতি দিয়েছে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেছিলেন, অভিযোগ রয়েছে জামায়াতের লবিস্ট ফার্মের মাধ্যমে তারা অর্থ পায়। একপেশে প্রতিবেদনের কারণে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তাদের ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। লেনদেনের ক্ষেত্রেও অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, উপদপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ।





আরো খবর