শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১১ শাওয়াল, ১৪৪৫ | ০৮:৫৯ পূর্বাহ্ন (GMT)
ব্রেকিং নিউজ :
X
শিরোনাম :
  • নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা রাষ্ট্রপতিকে দিয়েছে আ.লীগ: কাদের
  • ইসি নয়, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে হার্ডলাইনে যাবে বিএনপি


বৃহস্পতিবার, ২৩ নভেম্বর ২০১৭ ০৫:০০:১০ পূর্বাহ্ন Zoom In Zoom Out No icon

মন্ত্রী ও সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এমপিদের ক্ষোভ প্রকাশ

ঢাকা: মন্ত্রী ও সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যরা। বুধবার রাতে জাতীয় সংসদ ভবনের সরকারি দলের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভায় তারা এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে। সূত্রটি জানায়, একজন সংসদ সদস্য মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, আমার এলাকার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে চারজন মন্ত্রী টেলিফোন করে আমার কথা শুনতে নিষেধ করেছেন। একজন সংসদ সদস্য হিসেবে আমি ওই এলাকায় কীভাবে কাজ করব? জানা গেছে, সভায় কয়েকজন সংসদ সদস্য মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অনেক মন্ত্রী আছেন তাদের কাছে গেলে আমাদের কথা শোনেন না। আবার অনেক মন্ত্রী ইউএনও-ওসিকে ফোন করে আমাদের কথা না শোনার নির্দেশ দেন। এছাড়া কয়েকজন সংসদ সদস্য দলের সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, আমরা নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করলেও সিনিয়র নেতারা আমাদের পাত্তা দেন না। আবার কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা রয়েছেন যারা নির্বাচনী এলাকায় আমাদের বিরুদ্ধে কাজ করছেন, স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেন আমাদের কথা যেন তারা না শোনেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, দলের মধ্যে বিভেদ, স্বচ্ছ, পরিচ্ছন্ন ও গ্রহণযোগ্য নেতারাই আগামীতে মনোনয়ন পাবেন। দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষেই সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। প্রতি ছয় মাস অন্তর প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় আমি জরিপ করছি। মন্ত্রী-এমপিদের নির্বাচনী এলাকায় কার কী অবস্থান তার আমলনামা আমার কাছে আছে। জনপ্রিয়তার ব্যারোমিটার বাড়ান, জনপ্রিয়তা ব্যারোমিটারে যারা এগিয়ে রয়েছেন তারাই মনোনয়ন পাবেন। কারো মুখ দেখে আমি মনোনয়ন দেব না। যারা এলাকায় নিজেদের অবস্থান বা গ্রহণযোগ্যতা রক্ষা করতে পারেননি, তিনি যত বড়ই নেতা হোন না কেন আগামী মনোনয়ন পাবে না। তাই কাঁদা ছোঁড়াছুড়ি বন্ধ করে দলের পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে সবাই কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের আগামী নির্বাচনে জয়ী হতে হবে। নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় গিয়ে সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকা- তুলে ধরুন। পাশাপাশি বিএনপি-জামায়াতের ধ্বংসাত্মক রাজনীতি, জ্বালাও-পোড়াও তুলে ধরুন। নিজেদের মধ্যে কোন্দল করে লাভ নেই। কাকে মনোনয়ন দেয়া হবে সে বিষয় আমি দেখব। কারো মুখ দেখে আমি মনোনয়ন দিতে পারব না। সবাই কাজ করছে, আমি নিয়মিত বিষয়টি মনিটরিং করছি। জনপ্রিয়তার ভিত্তিতেই আমি মনোনয়ন দেব। কাঁদা ছোঁড়াছুড়ি বন্ধ করে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আত্মবিশ্বাসী হয়ে নির্বাচনী এলাকায় গিয়ে নৌকা মার্কার পক্ষে ভোট চাওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার গত ৮ বছরে দেশের যত উন্নয়ন করেছে, গত ৪০ বছরে অন্য সরকারগুলো তা করতে পারেনি। তাই ভোটে বিজয়ী হওয়ার আত্মবিশ্বাস নিয়েই নির্বাচনী এলাকায় কাজ করে যান। দেশের জনগণ আমাদের পক্ষেই রয়েছেন। ইনশাল্লাহ আগামী নির্বাচনেও জনগণের ভোটে আমরা বিজয়ী হব। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আর কোনো সময় অপচয় নয়, নির্বাচনী এলাকায় জনগণের ঘরে ঘরে গিয়ে তাদের মন জয় করার চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন, সবার আমলনামা আমার হাতে রয়েছে। আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকলে আমাদের কেউ পরাজিত করতে পারবে না। তাই এলাকার যার জনপ্রিয়তা রয়েছে, দলের নেতাকর্মী, সমর্থক ছাড়াও জনগণ যার সঙ্গে রয়েছে- তিনিই আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাবেন। দলের মধ্যে কোনোরূপ দ্বন্দ্ব-বিবাদ বা কোন্দলে জড়িত হবেন না। দল যাকে মনোনয়ন দেবে, তার পক্ষেই কাজ করতে হবে। দলের বিরোধিতাকারীদের ক্ষমা করা হবে না। আত্মবিশ্বাসী হয়ে নির্বাচনী মাঠে নামুন। একটি আসনে দশজন প্রার্থী থাকতেই পারে। সবাই সরকার, দল ও নৌকার পক্ষে ইতিবাচক কথা বলবেন। এসময় আলোচিত সংসদ সদস্য শামীম ওসমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমাদের দলের একজন নেতা সংবাদ সম্মেলন করে বলছেন, বিরোধী দলের কোন নেতার গাড়িতে আমাদের সংসদ সদস্য আগুন দিয়েছে। এই ধরনের কথা কারা বলাচ্ছে সে বিষয়ে আমাদের সতর্ক হওয়া উচিত। জানা গেছে, বৈঠকে শামীম ওসমান জোট সরকারের আমলে নির্বাচনী এলাকায় নিজের টিকতে না পারার কথা উল্লেখ করে শামীম ওসমান বলেন, ওই সময় তাকে দেশের বাইরে থাকতে হয়েছিল। তখন প্রধানমন্ত্রী কিছুটা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পালিয়ে যেতে হবে কেন? ভালো কাজ করলে তো কাউকে পালাতে হয় না। সভায় বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ, গৃহায়ণমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, হুইপ আতিউর রহমান আতিক, এ কে এম শামীম ওসমান, আবদুর রহমান বদি, ইফতেখার উদ্দিন তালুকদার পিন্টু, ছানোয়ার হোসেন তুহিন, অনুপম শাজাহান জয় প্রমুখ।





আরো খবর