জাতীয় / ভারতে প্রতিবছর দূষণে ২৫ লাখ মানুষের মৃত্যু
শুক্রবার, ২০ অক্টোবর ২০১৭ ১০:৪৮:৪৯ পূর্বাহ্ন
ভারতে প্রতিবছর দূষণে ২৫ লাখ মানুষের মৃত্যু
দিল্লি: ভারতে প্রতিবছর দূষণের কারণে ২৫ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়, যা সারা বিশ্বে সর্বোচ্চ। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে চীন, সেখানে দূষণজনিত মৃত্যু সংখ্যা ১৮ লাখ। দূষণ ও স্বাস্থ্য বিষয়ক ল্যান্সেট কমিশনের বার্ষিক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
এতে আরো বলা হয়, বিশ্বব্যাপী দূষণের কারণে ৯০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়, যা এইডস, যক্ষ্মা ও ম্যালেরিয়ায় মৃত্যুর তিনগুণ বেশি।
ল্যান্সেট মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বে প্রতি ছয়টি মৃত্যুর একটি দূষণের কারণে হয় এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এই সমস্যা সবচেয়ে প্রকট।
পরিবেশ সংরক্ষণে সচেষ্ট গ্রুপ ‘পিউর আর্থ’ এর সদস্য এবং উপদেষ্টা কার্তি সান্দিলিয়া বলেন, ‘বিশ্বায়নের সঙ্গে সঙ্গে খনন এবং উৎপাদন প্রক্রিয়া দরিদ্র দেশগুলোতে স্থানান্তরিত হয়, যেখানে পরিবেশগত নিয়ম ও প্রয়োগে অনেক শিথিল থাকে।’ উচ্চস্তরের বায়ু দূষণে মানুষ দীর্ঘদিন বসবাস করলে শ্বাসযন্ত্র ও শরীরের ইনফ্লামেটরি ব্যবস্থার ওপর প্রভাব পরে। এতে হৃদরোগ, স্টোক এবং ফুসফুসের ক্যান্সার হতে পারে।
সান্দিলিয়া আরো বলেন, ‘নয়াদিল্লির নির্মাণ শ্রমিকরা কর্মক্ষেত্রে দূষণের সামনে অনেক বেশী উন্মুক্ত থাকে। তারা নিজেদের সুরক্ষায় কোনো কিছু করতে পারে না। এমনকি তারা হেটে, সাইকেলে বা বাসে চড়ে কর্মক্ষেত্রে আসার সময়ও দূষণের শিকার হচ্ছে। অন্যদিকে, উন্নত দেশগুলোতে লোকজন এয়ারকন্ডিশন্ড গাড়ি চালিয়ে এয়ারকন্ডিশন্ড অফিসে ঢুকে কাজ করে। যা তাদেরকে দূষণ থেকে অনেকটাই দূরে রাখে।’
সম্প্রতি, বায়ু দূষণ থেকে রেহাই পেতে ভারতে সুপ্রিম কোর্ট এ বছরের দেওয়ালি উৎসবে দিল্লি ও আশপাশের এলাকায় আতশবাজি নিষিদ্ধ করে। কিন্তু তাতেও আতশবাজি কমেনি।
পিটিআই জানায়, দিল্লিতে দূষণ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রগুলোর অনলাইন সূচকগুলো দিওয়ালীর সময় ‘লাল’ হয়ে যায়। যা বায়ুর খুবই খারাপ অবস্থা নির্দেশ করে। ঐদিন সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ বাতাসে সূক্ষ্ম বস্তুকণার পরিমাণ অনেক বেড়ে যায় যা শ্বাসযন্ত্রের মাধ্যমে রক্ত পর্যন্ত পৌঁছে যায়।
দিল্লি দূষণ নিয়ন্ত্রণ কমিটির (ডিপিসিসি) আর কে পুরম জানান, পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে রাত ১১টার সময় পিএম ২.৫ (এক ধরণের সূক্ষ্ম বস্তুকণা) এবং পিএম ১০ প্রতি ঘন মিটারে যথাক্রমে ৮৭৮ ও ১১৭৯ মাইক্রোগ্রামে দাড়ায় যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এর নিরাপদমাত্রা হিসেবে ধরা হয় যথাক্রমে ৬০ ও ১০০ মাইক্রোগ্রাম।
ল্যান্সেট রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, বিশ্বে বায়ু দূষণে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটে, যা বছরে প্রায় ৬৫ লাখ।