শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১১ শাওয়াল, ১৪৪৫ | ০১:০৬ পূর্বাহ্ন (GMT)
ব্রেকিং নিউজ :
X
শিরোনাম :
  • নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা রাষ্ট্রপতিকে দিয়েছে আ.লীগ: কাদের
  • ইসি নয়, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে হার্ডলাইনে যাবে বিএনপি


শুক্রবার, ২০ অক্টোবর ২০১৭ ১০:৩৭:১৮ পূর্বাহ্ন Zoom In Zoom Out No icon

রাখাইনের হিন্দুদের বৌদ্ধধর্ম গ্রহণের প্ররোচনা কুখ্যাত বৌদ্ধ ভিক্ষু ভিরাথুর

নাইপেদো: সংঘাতপূর্ণ মায়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইনে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণে প্ররোচিত করছেন দেশটির কুখ্যাত বৌদ্ধ ভিক্ষু ভিরাথু। ভয়ঙ্কর এই বৌদ্ধ সন্ত্রাসী সম্প্রতি আরাকান সফরে গিয়ে হিন্দুদের সঙ্গে সাক্ষাতে এই প্রস্তাব দেন বলে সেখানকার হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা আর. কুমার জানান। কুমার বলেন, ‘রাখাইনের ‘সিতেই’ গিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে এক বিশেষ অনানুষ্ঠানিক সাক্ষাৎ করেছেন ভিরাথু। ওই সাক্ষাতে তিনি আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, যদি আমরা বৌদ্ধধর্মে ধর্মান্তরিত হই, তাহলে মায়ানমারে আমাদের একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা দেয়া হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আলোচনার শুরুতে তিনি আমাদের প্রলুব্ধকরার চেষ্টা করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি হুমকির স্বরে আমাদেরকে বলেন যে বার্মা কেবল বৌদ্ধদের জন্যই।’ কুমার জানান, রাগান্নিত কণ্ঠে ভিরাথু তাদের বলেন বৌদ্ধধর্ম হচ্ছে হিন্দুধর্মের একটি আপডেট সংস্করণ। যাইহোক, কুমার দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে তার সনাতন ধর্মের নিকট কোনো কিছুই তুলনীয় নয় এবং তিনি নিশ্চিত করেছেন যে, তিনি কোনো কিছুতেই তার পূর্বপুরুষের বিশ্বাস ত্যাগ করবেন না। যদিও কিছু অংশগ্রহণকারী ভিরাথুর প্রলোভনকে ইতিবাচকভাবে সাড়া দিয়েছিল বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। উত্তর মংডুতে হিন্দুদের কথিত গণহত্যার প্রকৃত সত্য সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে কুমার বলেন, ‘হিন্দুদের প্রতি তাদের সান্ত্বনার গোপন রহস্য হচ্ছে, তারা আমাদেরকে এই সুযোগে বৌদ্ধ ধর্মে ধর্মান্তরিত করতে চায়। তারা যদি সত্যিই আমাদের ভালবাসে তবে কেন ভিরাথু আমাদের এই প্রস্তাব দিচ্ছেন? কেন তারা আমাদেরকে ‘কালা’ বলে ডাকে?’ ঘৃণিত ও ভয়ঙ্কর এই বৌদ্ধ সন্ত্রাসী ভিরাথু সম্প্রতি আরাকান রাজ্য সফর করেন। যেখানে তিনি বৌদ্ধ ও হিন্দু উভয় সম্প্রদায়ের লোকদের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। ভিরাথু এবং স্থানীয় ভিক্ষুরা জানান, তারা মংডু থেকে নির্বাসিত হিন্দু ও বৌদ্ধদের জন্য ১.৮ মিলিয়ন কিয়াট দান করেছেন। কে এই ভিরাথু রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যায় নেতৃত্ব এই বৌদ্ধ সন্ত্রাসী নিজেকে মায়ানমারের বিন লাদেন বলে ঘোষণা করেছেন বলে টাইম ম্যাগজিনের খবরে বলা হয়। বিন লাদেন আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল, কিন্তু ভিরাথুর যুদ্ধ নিজ দেশের রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে। যে সন্ত্রাসী দলটির নেতৃত্বে সে রয়েছে, একসময় তার নাম ছিল ৯৬৯ আন্দোলন। এখন দেশের নামের আদ্যক্ষর দিয়ে তার নতুন নাম হয়েছে মা বা থা। নাম যেটাই হোক, ভিরাথু ও তার দলের একটাই লক্ষ্য, প্রত্যেক রোহিঙ্গাকে হয় নির্মূল অথবা দেশ থেকে বহিষ্কার করা। রোহিঙ্গাদের সম্বন্ধে ভিরাথু একসময় মন্তব্য করেছিল, এই লোকগুলো শৃগালের মতো, তারা তখনই ভদ্র ব্যবহার করে, যখন তাদের বেকায়দায় ফেলা হয়। বৌদ্ধধর্মে শুধু মানুষ নয়, যেকোনো প্রাণী হত্যাই ভয়ানক অপরাধ। অথচ ভগবান বুদ্ধের সেই অনুসারীরাই এখন পুরো একটা ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীকে নির্মূল করতে উঠেপড়ে লেগেছে। এটা মোটেই বিস্ময়কর নয় যে বৌদ্ধ ভিক্ষুর নেতৃত্বে মায়ানমারের জাতীয়বাদী শক্তিগুলো এই অভিযানে অংশ নিচ্ছে, সেই ভিরাথুকে জাতীয় বীরের সম্মান দিয়েছে দেশের বিগত সামরিক সরকার। এমনকি অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির অনেক কর্তাব্যক্তিও ভিরাথুর মা বা থা আন্দোলনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। সাবেক সামরিক রাষ্ট্রপ্রধান থেইন সেইন এমন কথাও বলেছে যে এই আন্দোলন আসলে ‘শান্তির এক প্রতীক’ এবং এই আন্দোলনের নেতা ভিরাথু ‘ভগবান বুদ্ধের সন্তান’। দেশের বাইরেও বর্মিরা ভিরাথুকে বীরের সম্মান দেখিয়েছে। ২০১৪ সালে লন্ডনে বর্মিদের সর্ববৃহৎ উপাসনালয় সাসানা রামসি ‘ধর্মীয় স্বাধীনতায়’ অবদানের জন্য ভিরাথুকে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত করে। ভিরাথু ও তার দল যে অভিযান শুরু করেছে, তা শুধু রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নয়, ইসলামের বিরুদ্ধেও। এই দলের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা উ পামাউখা বলেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যের সঙ্গে তাদের আন্দোলনের সম্পূর্ণ মিল রয়েছে।বলেছে, ‘যত দিন ইসলাম থাকবে, তত দিন সন্ত্রাসী থাকবে, তাই আমরা ট্রাম্পের মতোই আমাদের দেশ ও ধর্মকে ইসলামের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য লড়ছি।’ এই অহিংস পরম ধর্মের লোকেরাই চরম হিংস্র। এদেরই অনুসারী পার্বত্য চট্রগ্রামে বসবাসরত উপজাতি ভীনদেশি সন্ত্রাসীরা। সরকারকে অবশ্যই এদের বিষয়ে সাবধান হতে হবে।





আরো খবর