মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ৭ শাওয়াল, ১৪৪৫ | ১০:৫৫ অপরাহ্ন (GMT)
ব্রেকিং নিউজ :
X
শিরোনাম :
  • নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা রাষ্ট্রপতিকে দিয়েছে আ.লীগ: কাদের
  • ইসি নয়, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে হার্ডলাইনে যাবে বিএনপি


রোববার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০১৮ ০৮:১২:০৮ পূর্বাহ্ন Zoom In Zoom Out No icon

র‌্যাগিংয়ের পর নিজের বাবাকেও চিনতে পারছেন না জাবি শিক্ষার্থী

একই বিভাগের সিনিয়র শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের শিকার হয়ে মানুসিকভাবে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রথম বর্ষের ওই শিক্ষার্থীর নাম মিজানুর রহমান। বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ থানার কাইকোরিয়াকান্দা গ্রামে। মিজানুর নিজের বাবাকেসহ কাউকে চিনতে পারছেন না বলে জানিয়েছে পরিবার। এ ঘটনায় ক্যাম্পাসে নিন্দার ঝড় বইছে। মিজানুরের সহপাঠীরা জানান, গত বুধবার দুপুরে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের কিছু শিক্ষার্থী পরিচিত হওয়ার জন্য নবীন শিক্ষার্থীদের দেখা করতে বলে। পরিচয় পর্ব শেষে দ্বিতীয় বর্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থী মিজানুরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। একপর্যায়ে শারীরিকভাবেও তাকে লাঞ্ছিত করা হয়। এসময় ওই বিভাগের প্রথম বর্ষের যেসব শিক্ষার্থী আবাসিক হল হিসেবে শহীদ সালাম বরকত হল বরাদ্দ রয়েছে তাদের আ. ফ. ম. কামালউদ্দিন হলে উঠতে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে আবারও মিজানুরকে ডেকে হুমকি দেয় তারা। এতে মিজানুর আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। বৃহস্পতিবার রাত থেকে অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকেন মিজানুর। হলের অগ্রজ শিক্ষার্থীরা দেখতে এলে ‘তুই আমার জীবন শেষ করেছিস, তোরা আমাকে মেরে ফেলবি’ বলে প্রলাপ বকতে থাকেন। পরেরদিন, অবস্থার আরও অবনতি হয়। বন্ধুদের মিজানুর বলতে থাকেন ‘ওরা আমাকে মেরে ফেলবে’, ‘গুম করে ফেলবে’, ‘মরার আগে শেষ বারের মতো আব্বা-আম্মার সাথে দেখা করতে দেন ভাই’। বিষয়টি মিজানুরের পরিবারকে জানানো হলে শুক্রবার রাতে তার বাবা ও চাচা ক্যাম্পাসে আসেন। বাবা ও চাচাকে দেখে চিনতে পারছিল না মিজানুর। চিকিৎসকের কাছে নেয়ার সময় উদ্ভট আচরণ করতে থাকেন তিনি। ছেলের এমন অবস্থা দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন মিজানুরের বাবা। মিজানুরের সবশেষ অবস্থা জানতে চাইলে তার চাচা জয়নাল আবেদীন জানান, মিজানুর কাউকে চিনতে পারছে না। এমনকি কাউকে দেখলেই ভয় পাচ্ছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে মানসিক ডাক্তারের কাছে নেয়া হচ্ছে। এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সমালোচনার ঝড় বইছে। জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়ার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৬-তম ব্যাচের মামুন, হিমেল, সুদীপ্ত ও ক্লাস প্রতিনিধি আনোয়ারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক এটিএম আতিকুর রহমান জানান, জিজ্ঞাসাবাদকালে তারা র‌্যাগিংয়ের বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন। তবে তাদের কথা শুনে যতোটুকু বোঝা গেছে তারা র‌্যাগিংয়ের সাথে জড়িত ছিল। কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, রোববার সকাল সাড়ে ৯টায় একাডেমিক বৈঠক বসবে। সেখানে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আজীবন বহিষ্কারের সুপারিশ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আমরা আবেদন জানাবো। র‌্যাগিংয়ের ঘটনায় জড়িতদের নিয়ম অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়ার কথা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম।





আরো খবর