ফরিদপুর: ফরিদপুরে বৃদ্ধ কর্তৃক তৃতীয় শ্রেণীর এক ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা স্থানীয় বখাটে যুবকরা ভিডিও ধারণ করে। পরে ৭০ বছর বয়সী ওই বৃদ্ধের কাছে লাখ টাকা দাবি করে ভিডিও ধারণকারীরা। মাত্র সাত শ’ টাকা দিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে ও বৃদ্ধ। কিন্তু এতে রাজি না হয়ে বখাটেরা শিশু ধর্ষণেও ওই ভিডিওটি এলাকাবাসীর মোবাইল ফোনে ছড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে এলাকাবাসী ওই বৃদ্ধকে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করে।
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, ফরিদপুরের ঈষান গোপালপুর এলাকায় ১২ বছরের তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছে কানু শেখ নামে ৭০ বছর বয়সের এক বৃদ্ধ। বৃদ্ধ ধর্ষণ করে মেয়েটিকে হুমকি দেয় ঘটনাটি কাউকে বললে তাকে মেরে ফেলা হবে। আজ শুক্রবার সকালে মোবাইলের মাধ্যমে ঘটনাটি জানাজানি হয়ে গেলে এলাকার জনগণ উত্তেজিত হয়ে কানু শেখকে আটক করে। পরে তাকে উত্তম মাধ্যম দিয়ে পুলিশের নিকট সোপর্দ করে। এলাকার মানুষ এখন ঘটনাটির উপযুক্ত বিচার দাবি করেছে।
ফরিদপুর সদর উপজেলার ঈষান গোপালপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের মেহের শেখের মেয়ে ঈষান গোপালপুর সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেনীর ছাত্রী। মেয়েটির পিতা প্রতিবন্দি ও অত্যন্ত গরীব।
অসহায় পিতামাতা অর্থনৈতিক অচ্ছলতার কারনে মেয়েটি পাড়াশুনার পাশাপাশি সংসারিক কাজে সহযোগিতার করে। গত ২৫শে অক্টোবর বিকেলে এলাকার খোলা মাঠে তাদের একটি ছাগল আনতে যায় মেয়েটি। সুযোগ বুঝে কানু শেখ মেয়েটিকে কুপ্রস্তাব দেয়। রাজি হয় না মেয়েটি। এরপর টাকা প্রস্তাব দেয়া হয়। এতেও রাজি না হলে মেয়েটিকে পাশ্ববর্তী একটি হলুদ ক্ষেতে নিয়ে জোর করে ধর্ষণ করে।
মেয়েটির আত্মচিৎকার শুনে এলাকার বখাটে যুবক মুজাহিদ ও মিলন ধর্ষণের ঘটনাটি মোবাইলে ভিডিও করে। পরবর্তিতে কানু শেখকে তা দেখিয়ে এক লাখ টাকা দাবি করে। এসময় কানু শেখ সাতশ টাকা বাখাটে যুবকদের হাতে দেয়। নাখোশ হয়ে যুবকদ্বয় বাকি টাকার চাপ দেয়। বৃদ্ধ বাখাটেদের টাকা না দিতে পারায় আজ সকালে বখাটেরা গোপালপুর বাজারে বিভিন্ন লোকের মোবাইলের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় ক্ষুদ্ধ হয় এলাকার জনগণ। একজোট হয়ে কানু শেখের বাড়িতে যেয়ে তাকে ধরে উত্তোম মাধ্যম দিয়ে পুলিশের নিকট সোপর্দ করে। এলাকার জনগণ এখন ধর্ষক কানু শেখ, মুজাহিদ ও মিলনের উপযুক্ত বিচারের দাবি করছে।
মেয়েটি জানায়, আমি বিকেলে ছাগল আনতে গেলে বুড়া আমাকে ইশারা দিয়ে নিয়ে কুপ্রস্তাব দেয়। আমি রাজি না হলে টাকা দিতে চায় তাতেও রাজি না হলে আমাকে জোর করে ধর্ষণ করে। এদিকে কানু শেখ ঘটনাটি তিনি ঘটিয়েছেন বলে উল্লেখ করে বলেন, আমার বড় বড় ছেলেমেয়ে নাতিপুতি রয়েছে। আমি ভুল করেছি। এখন আমার জেল ফাঁস হওয়া উচিত।
ফরিদপুর কোতয়ালী থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক মো জাহাঙ্গির বলেন, ঘটনাস্থলে এসে আমি সবার কাছ থেকে জানতে পারলাম মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে। আমার কাছেও ঘটনাটি সত্য মনে হচ্ছে। আমি ধর্ষককে আটক করে নিয়ে যাচ্ছি। তদন্ত সাপেক্ষ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।