আন্তর্জাতিক / শিশু জয়নব আনসারি ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় ইমরান আলীকে চার দফা মৃত্যুদণ্ড
রোববার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৮ ০৪:৫৭:০৪ পূর্বাহ্ন
শিশু জয়নব আনসারি ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় ইমরান আলীকে চার দফা মৃত্যুদণ্ড
লাহোরে ছয় বছরের শিশু জয়নব আনসারি ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ইমরান আলীকে চার দফা মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন পাকিস্তানের একটি আদালত। হত্যাকাণ্ডের দেড় মাসের মাথায় গতকাল শনিবার ইমরানকে অপহরণ, ধর্ষণ, হত্যা ও সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে এ রায় দেন আদালত।
এ ছাড়া তাকে সমকামিতার অভিযোগে যাবজ্জীবন, অন্য একটি অভিযোগে সাত বছরের কারাদণ্ড এবং ২০ লাখ রুপি জরিমানা করা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য লাহোরের কেন্দ্রীয় কারাগারে বিশেষ আদালত বসিয়ে এ রায় দেওয়া হয়। রায় ঘোষণার সময় জয়নবের বাবা হাজী মুহাম্মদ আমিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের জন্য ইমরানকে ১৫ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জেনারেল এহতেশাম কাদির। বিচারে ইমরান আলীর বিরুদ্ধে অনেকে সাক্ষী দিয়েছে। ডিএনএ এবং পলিগ্রাফ পরীক্ষার ফলও আদালতে হাজির করা হয়। ইমরান শুরুতে অভিযোগ অস্বীকার করলেও পরে নিজের দোষ স্বীকার করে নেয়। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ইমরান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। এরপর তার আইনজীবী মামলা থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।
গত ৯ জানুয়ারি লাহোরের দক্ষিণের কাসুর শহরের একটি ময়লার ভাগাড় থেকে ছোট্ট জয়নবের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ৪ জানুয়ারি থেকেই নিখোঁজ ছিল সে। পরে জানা যায়, মক্তবে কোরআন পড়া শেষে বাড়ি ফেরার পথে অপহৃত হয় সে। ওমরাহ পালন করতে ওই সময় তার মা-বাবা সৌদি আরবে ছিলেন। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে জয়নবকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যার কথা বলা হয়। যে ভাগাড়ে জয়নবের মৃতদেহ পাওয়া যায় সেটা তার বাড়ি থেকে দুই কিলোমিটার দূরে।
জয়নবের আগে কাসুর ও আশপাশে আরো কয়েকজন নারী-শিশুর হত্যাকাণ্ডের সুরাহা করতে না পারায় পুলিশের ওপর ব্যাপক চাপ তৈরি হয়। জয়নবের মৃতদেহ উদ্ধারের পর পুলিশের ব্যর্থতার বিরুদ্ধে স্থানীয়রা বিক্ষোভ শুরু করে। বিক্ষুব্ধ জনতার সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে দুই বিক্ষোভকারী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। জয়নবের পরিবার অভিযোগ করেছে, তাদের মেয়ের উধাও হওয়ার পর থেকে তার মৃতদেহ পাওয়া পর্যন্ত পাঁচ দিনে পুলিশ কিছুই করেনি। এমনকি অন্তর্ধানের দিন জয়নবের সর্বশেষ গতিবিধির সিসিটিভি ফুটেজও জোগাড় করে তার স্বজনরা। ওই ফুটেজে দেখা যায়, এক যুবক তাকে নিয়ে হেঁটে যাচ্ছে। পুলিশ ইমরান আলীকে গ্রেপ্তার করে ২৩ জানুয়ারি। এর পর বিচার শুরু করে এক মাসের কম সময়ের মধ্যে রায় দিলেন আদালত।