বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল, ১৪৪৫ | ০১:০০ পূর্বাহ্ন (GMT)
ব্রেকিং নিউজ :
X
শিরোনাম :
  • নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা রাষ্ট্রপতিকে দিয়েছে আ.লীগ: কাদের
  • ইসি নয়, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে হার্ডলাইনে যাবে বিএনপি


বৃহস্পতিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৭ ১২:৫৮:১৭ অপরাহ্ন Zoom In Zoom Out No icon

ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ মধ্যপ্রাচ্যের খ্রিস্টানরাও, প্রতিবাদে ক্রিসমাসে জ্বলছে না আলো

পূর্ব জেরুজালেম: জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসাবে ট্রাম্পের স্বীকৃতিতে সারা বিশ্বের মুসলিমদের মতো মধ্যপ্রাচ্যের খ্রিস্টান সম্প্রদায়কেও ক্ষুব্ধ করেছে। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে যিশু খ্রিস্টের জন্মস্থান বেথলেহেম শহরে ক্রিসমাস ট্রিতে আলো জ্বালানো বন্ধ রেখেছে খ্রিস্টান ধর্মীয় নেতারা। ট্রাম্পের এই স্বীকৃতির প্রতিবাদে ইসরাইল দখলকৃত পশ্চিম তীরের বেইত সাহুর শহরে বিক্ষোভ করেছে খ্রিস্টানরা। এই বিক্ষোভ সমাবেশে জনতার উদ্দেশ্যে জেরুজালেমের সাবেক আর্চবিশপ এবং ল্যাটিন কমিউনিটির প্রধান মিশেল সাব্বা বলেন, ‘ক্রিসমাসের আনন্দ থেকে অত্যাচারীরা আমাদেরকে বঞ্চিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ট্রাম্প আমাদেরকে স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন যে জেরুজালেম আমাদের নয়।’ ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে জনসমর্থণের জন্য আগামী সপ্তাহে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স এই অঞ্চলটিতে সফরে আসছেন। এই সফরে তিনি এই অঞ্চলের খ্রিস্টানদের প্রবল বিরোধীতার সম্মুখীন হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। মিশরীয় কপ্টিক চার্চের পোপ মিশেল সাব্বা মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে বড় খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি কায়রোতে পেন্সের সঙ্গে পূর্ব নির্ধারিত বৈঠকটি বাতিলের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। ইরাকের চ্যালডিয়ান চার্চ এই সপ্তাহে সতর্ক করে দিয়ে বলেছে যে জেরুজালেম নিয়ে হোয়াইট হাউজের পদক্ষেপ আঞ্চলিক সহিংসতার ঝুঁকি ও চরমপন্থাকে উসকে দিয়েছে। বিবৃতিতে শহরটি নিয়ে জাতিসংঘের রেজুলেশনের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর বেথলেহেমে প্রায় ১২ শতাংশ খ্রিস্টান জনগোষ্ঠীর বাস এবং পেন্স তার মধ্যপ্রাচ্য সফরে এই শহরটিতেও আসবেন। গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউসের ঘোষণার প্রতিবাদে বেথলেহেমের ধর্মীয় নেতারা শহরটিতে ক্রিসমাস ট্রি লাইট জ্বালানো বন্ধ রেখেছে। শহরের দেয়ালগুলোতে বড় বড় অক্ষরে প্রতিবাদী স্লোগান শোভা পাচ্ছে। ২৬-ফুট উচ্চ কংক্রিটের ইসরাইলি নিরাপত্তা দেয়াল যেটি বেথেলহেমকে জেরুজালেম থেকে আলাদা করেছে, তাতে লাল কালি বড় অক্ষরে লেখা হয়েছে ‘মি. পেন্স আপনাকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি না’ রবিবার যিশুর এর জন্মস্থল হিসেবে পরিচিত ন্যাটিভিটি চার্চের বাইরে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বিক্ষোভকারীরা অবস্থান ধর্মঘট পালন করেন। রবিবারের বিক্ষোভে অংশ নেয়া বেথলেহেমে জন্মগ্রহণকারী খ্রিস্টান রাজনীতিবিদ সালেহ বান্দাক বলেন, ‘আমরা এখানে পেন্সকে স্বাগত জানাচ্ছি না।’ মধ্যপ্রাচ্যের খ্রিস্টান সম্প্রদায় ট্রাম্পের এই স্বীকৃতিকে মেনে না নিলেও এই পদক্ষেপ আমেরিকান খ্রিস্টানদের উদ্দেশ্যের একটি রাজনৈতিক ইঙ্গিত বহন করে। গত বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আমেরিকান ধর্মপ্রচারক খ্রিস্টানরা ব্যাপকভাবে ট্রাম্পকে সমর্থন দেন। এসব খ্রিস্টানদের বিশ্বাস যে ইহুদিদের জেরুজালেমের ওপর বাইবেলিক অধিকার রয়েছে। সুতরাং বলা যায়, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের পিছনে একটি শক্তিশালী লবিং ছিল। ফিলিস্তিনি খ্রিস্টানদের অভিযোগ, খ্রিস্টান ধর্মপ্রচারকদের ইসরাইলকে সমর্থনে আমাদের অধিকারকে বিবেচনায় নেয়া হয়নি। রেভ মিতরি রাহেব নামে বেথলেহেম একজন লুথেরান যাজক বলেন, ‘এই বিক্ষোভ সব জায়গাতেই শুরু হয়েছে। বাইবেল জন্মলাভ করেছে ফিলিস্তিনে, বাইবেল বেল্টে নয়। কিন্তু বাইবেল বেল্টের মানুষ বাইবেলকে এমন একটি উপায়ে পড়েন যা প্রকৃতপক্ষে আমাদের জীবনকে কঠিন করে তোলে।’ নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী, ট্রাম্প মোট ভোটের প্রায় ৮০ শতাংশ খ্রিস্টান ধর্মপ্রচারকদের ভোট পান। গত ৬ ডিসেম্বর জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী স্বীকৃতি দেয় যুক্তরাষ্ট্র। তেল আবিব থেকে তাদের দূতাবাস সেখানে সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেওয়া হয় স্টেট ডিপার্টমেন্টকে। মার্কিন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় গত ছয় দিন ধরে চলছে বিক্ষোভ। এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য পেড়িয়ে বিক্ষোভ ছড়িয়েছে উত্তর আমেরিকা পর্যন্ত। মঙ্গলবার বিক্ষোভ হয়েছে জার্মানির বার্লিনে। শহরের মূল রেলস্টেশনে এদিন বিক্ষোভকারীরা জড়ো হয়। প্যালেস্টাইনের রেড ক্রিসেন্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত ছয় দিনের বিক্ষোভের সময় পশ্চিম তীর আর গাজা উপত্যকায় তারা এক হাজার ৭৯৫ জনকে চিকিৎসা দিয়েছে।





আরো খবর