মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০, ৯ রমজান, ১৪৪৫ | ১০:০০ পূর্বাহ্ন (GMT)
ব্রেকিং নিউজ :
X
শিরোনাম :
  • নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা রাষ্ট্রপতিকে দিয়েছে আ.লীগ: কাদের
  • ইসি নয়, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে হার্ডলাইনে যাবে বিএনপি


সোমবার, ২৩ অক্টোবর ২০১৭ ০৮:০৬:০১ পূর্বাহ্ন Zoom In Zoom Out No icon

শিশুর মেদভুঁড়ি, কী করি!

বাহ, শিশুটি তো বেশ নাদুস-নুদুস। গোলগাল। ছোটবেলা থেকে আমরা এভাবেই শিশুদের প্রশংসা করি। মা-বাবাও শুনে খুশি হন। কিন্তু একটু বড় হলে শিশুর এই ভালো স্বাস্থ্যই চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, বয়স ও উচ্চতা অনুযায়ী একটি শিশুর যা ওজন হওয়া উচিত, তার চেয়ে বেশি হয়ে গেলে তাকে স্থূল বা ওজনাধিক্য সমস্যায় আক্রান্ত বলতে হবে। পুষ্টিহীনতা বা কম ওজনের শিশু যেমন অসুস্থ, তেমনি অতিরিক্ত ওজনের শিশুও কিন্তু সুস্থ নয়। স্থূল বা মোটা শিশু নিয়ে পশ্চিমেও সমস্যা চলছে। গবেষণা বলছে, বাংলাদেশসহ এশিয়ার দেশগুলোতেও এই সমস্যা বাড়ছে। শুধু মোটাই নয়, শিশুদের ভুঁড়িও বাড়ছে। যেকোনো স্কুলের সামনে দাঁড়ালে ভুঁড়িওয়ালা শিশু নেহাতই কম দেখা যায় না। প্রশ্ন হচ্ছে, কেন মোটা হয়ে যাচ্ছে শিশুরা? শিশুর প্রতিদিনের জীবনযাত্রার দিকে তাকালে মেলে উত্তর। শিশুরা প্রায় প্রতিদিনই নানা রকমের ফাস্ট ফুড, কোমল পানীয়, চকলেট, জুস, আইসক্রিম ও নানা চিনিযুক্ত ডিপ ফ্রাই খাবার খেতে অভ্যস্ত। বাড়িতে তো বটেই, স্কুলের টিফিনেও তাদের এসব চাই। এসব খাবার উচ্চ ক্যালরিযুক্ত। কেবল তা–ই নয়, এতে ক্ষতিকর ট্রান্সফ্যাটও থাকে। এগুলো ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। এ তো গেল খাওয়ার কথা। শিশুরা সারা দিন কী করে? খাওয়া, ঘুম, টিভি দেখা। এর বাইরে তাদের জীবন নেই। পড়ার অতিরিক্ত চাপ, স্কুলগুলোতে খেলার মাঠের অভাব, সামাজিক নিরাপত্তাহীনতা নানা কারণে মা-বাবা শিশুকে ঘরে আটকে রাখেন। বাইরে খেলতে দিতে চান না। কম্পিউটার বা মোবাইল ফোনের নানা গেমস এবং টিভি দেখাও ওজন বাড়ার আরেকটি কারণ। গবেষণা বলছে, যেসব শিশু ছোটবেলা থেকেই মোটা, যাদের ভুঁড়ি আছে, ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি, তারা পরে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়বেটিস এবং হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এ কারণে আজকাল কৈশোরেই টাইপ ২ ডায়াবেটিসের প্রবণতা বাড়ছে। মেয়েশিশুদের ডায়বেটিস, পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম, অনিয়মিত মাসিক, বন্ধ্যত্ব, অবাঞ্ছিত লোমের মতো হরমোনজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। সচেতন অভিভাবক হিসেবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নিয়ে এখনই সতর্ক হওয়ার সময় এসেছে। সন্তানের ওজন কমাতে মা-বাবা যা করতে পারেন তা হলো: ১. শিশুদের উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়ানো কমিয়ে দিন। বিশেষ করে ফাস্ট ফুড, প্রক্রিয়াজাত খাবার, বেকারি ও অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার খাওয়া কমিয়ে মাসে এক বা দুবারে নিয়ে আসুন। ২. কষ্ট হলেও বাড়িতে তৈরি টিফিন স্কুলে দিন। বাড়িতে রান্না করা খাবারে অভ্যস্ত করুন। ভাত-রুটির সঙ্গে ডিম, দুধ, মাছ-মাংস মিশিয়ে শর্করা, আমিষ ও স্নেহ পদার্থের সুষম খাবার শিশুকে দিন। ৩. প্রতিদিন অন্তত পাঁচ রকমের তাজা শাকসবজি ও ফলমূল খেতে দিন শিশুকে। স্কুলের টিফিনে বা স্ন্যাক্স হিসেবেও ফলমূল দেওয়া যায়। ৪. শিশুদের খেলাধুলায় উৎসাহ দিন। পড়ার টেবিল থেকে কিছুটা বিরতি দিন। কেবল পরীক্ষায় ফার্স্ট হলেই চলবে না; সুস্থতাও দরকার। ৫. কম্পিউটার, মোবাইল বা ভিডিও গেম ব্যবহার দিনে এক ঘণ্টার বেশি নয়। ৬. শিশুদের সুশৃঙ্খল জীবনাচরণে উৎসাহ দিন। ঠিক সময়ে ঘুমানো, ঠিক সময়ে খাওয়ার ওপর জোর দিন। যদি আপনার শিশু খাবার কম খাওয়ার পরও মোটা হয়ে যেতে থাকে, তাহলে আরেকটু ভাবুন। শরণাপন্ন হতে পারেন চিকিৎসকদের। অনেক সময় থাইরয়েড বা অন্যান্য হরমোনের জটিলতার কারণেও শিশুদের ওজন বাড়তে পারে। রক্তে শর্করা, চর্বি ইত্যাদিরও পরীক্ষা প্রয়োজন।





আরো খবর